বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কেউ মাংকিপক্স ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়নি। বিশ্বে মোট ১৭ হাজার মাংকিপক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশে এই রোগ যেন না ছড়াতে পারে এ জন্য আগাম সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ। আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডাক্তার মিল্টন হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় ভাইরাসটির সংক্রমণ, সতর্কতা ও আগাম প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ ও বিদেশ থেকে আসা লোকদের পরীক্ষা করানো দরকার। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে আইসোলেটেড করতে হবে। একই সঙ্গে আক্রান্ত বা সন্দেহজনক প্রাণীর সংস্পর্শে না যাওয়া, প্রাণীর কামড়, আঁচড়, লালা বা প্রসাব থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে।
আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে সকল ক্ষত শুকানো পর্যন্ত আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টিন করে চিকিৎসা করা। উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা দেওয়ার বিষয়েও সতর্ক করেন তিনি। কিভাবে সংক্রমণ হতে পারে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। আবার শ্বাস-প্রশ্বাসের ফোঁটা বা ড্রপলেট দ্বারা কিংবা স্বল্প দূরত্বে, দীর্ঘক্ষণ সান্নিধ্যে থাকার সময় সংক্রমিত হতে পারে।
ঢাকার সেরা কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তালিকা,List of kidney specialists in Dhaka
মাংকিপক্সে আক্রান্ত অন্য ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ শারীরিক যোগাযোগের মাধ্যমেও কেউ আক্রান্ত হতে পারে, একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে মেলামেশাকে প্রধান ফ্যাক্টর হিসেবে দেখা হয়। এই রোগের লক্ষণগুলো তুলে ধরে ডা. শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, মাংকিপক্স আক্রান্তের ক্ষেত্রে যেসব জটিলতা দেখা যায়, তার মধ্যে স্থায়ী ক্ষত, বিকৃত দাগ, সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, ব্রংকোপনিউমোনিয়া শ্বাসকষ্ট, কেরাটাইটিস, কর্নিয়ার আলসারেশন, অন্ধত্ব, সেফটিসেমিয়া ও এনসেফালাটিস।
জ্বরজনিত অসুখের সাথে ঠাণ্ডা লাগা, ঘাম, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, পিঠে ব্যথা, ক্ষুধামন্দা, ফ্যারিঞ্জাইটিস, শ্বাসকষ্ট ও কাশি দেখা যায়। তিনি বলেন, রোগীদের মধ্যে ৭৪ শতাংশ বহুগামিতায় অভ্যস্ত। ২৬ শতাংশ এইচআইভি পজিটিভ। ৯০ শতাংশ রোগী ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু। গুটিবসন্তের টিকা বন্ধ করা এর একটি কারণ হতে পারে। এই টিকা মাংকিপক্স থেকে ৮৫ শতাংশ সুরক্ষা প্রদান করে।
দুই সপ্তাহের মধ্যে, সম্ভব হলে চার দিনের মধ্যে এটি ব্যবহার করতে হবে। ১৯৫৮ সালে ল্যাবরেটরিতে প্রথম বানরের দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। ১৯৭০ সালে এই ভাইরাসকে মাংকিপক্স নামকরণ হয়। ভাইরাসটির দুটি স্ট্রেইন আছে। এর মধ্যে কঙ্গো বেসিন স্ট্রেইন পশ্চিম আফ্রিকার স্ট্রেইনের চেয়ে বেশি মারাত্মক। ভাইরাসটি পশু থেকে প্রাণী এবং পশু থেকে মানুষের সংক্রমিত হয়। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর মাধ্যম বলে বিবেচিত বলে জানান তিনি।
তথ্যসূত্র: kalerkantho