আজ আন্তর্জাতিক নার্স দিবস, আধুনিক নার্সিংয়ের প্রতিষ্ঠাতার সম্পর্কে জানুন…

আন্তর্জাতিক নার্স দিবস আজ

আন্তর্জাতিক নার্স দিবস আজ (১২ মে)। আধুনিক নার্সিং পেশার রূপকার ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী এ তারিখে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উদযাপন করা হয়। মানবসেবায় অনন্য দায়িত্ব পালনকারী নার্সদের স্বীকৃতি ও সম্মান প্রদর্শনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি উদযাপন করা হবে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য, ‌‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় শক্তিশালী নার্স নেতৃত্বের বিকল্প নেই- বিশ্ব স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে নার্সিং খাতে বিনিয়োগ বাড়ান ও নার্সের অধিকার সুরক্ষিত করুন’। নার্স দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মহাখালীতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এদিকে সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটস (এসএনএসআর) নার্স দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রা, কেক কাটা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশে দিবসটি পালন করে আসছে। অতীতে ঢাকায় স্বল্প পরিসরে দিবসটি পালিত হলেও বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ইনস্টিটিউশনে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।

 

সেবিকাদের সম্মানে উৎসর্গ করা হয়েছে ১২ মে অর্থাৎ আজকের দিন (international nurses day) । সমাজের প্রতি নার্সদের অবদান, যেভাবে তাঁরা অসুস্থদের শুশ্রূষা করেন, তা সকলের সামনে তুলে ধরতে এই দিনটি (international nurses day) পালন করে বিশ্ব। ১৮২০ সালের ১২ মে ইতালির অভিজাত পরিবারে জন্ম আধুনিক নার্সিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের (Florence Nightingale)। ১৯৭৪ সাল থেকে তাঁর জন্মদিনটি ‘ইন্টারন্যাশনাল নার্সেস ডে’ (international nurses day) হিসাবে পালিত হয়ে আসছে গোটা বিশ্বে। আধুনিক নার্সিংয়ের জননী ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন ১২ মে। তাই এই দিনটি পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নার্স দিবস হিসেবে। গোটা বিশ্বে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অন্যান্য পেশার থেকে নার্সের সংখ্যা বেশি। আধুনিকতম স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, রোগীদের চাহিদা সম্পর্কে ওয়ার্কশপ ও সেমিনারের আয়োজন ইত্যাদি পড়ে তার মধ্যে। প্রতিটি দেশ নিজের নিজের মত করে পালন করে এই দিনটি।

প্রতিবন্ধী শিশুদের বিশেষ বিদ্যালয়

ডার্বিশায়ার থেকে ১৭ বছর বয়সে লন্ডনে আসেন ফ্লোরেন্স (Florence Nightingale)। সেই সময়ে লন্ডনের হাসপাতালগুলোর অবস্থা ছিল খুবই করুণ। এর অন্যতম কারণ সে সময়ে কেউ সেবিকার কাজে এগিয়ে আসতেন না। কারণ সামাজিক ভাবেও মর্য়াদা দেওয়া হত না এই পেশাকে। তবে নাইটিঙ্গেল জানতেন পৃথিবীতে তিনি এসেছেন সেবিকা হওয়ার জন্যই। বাবা মা বিরূপ বিরূপ হয়েছেন সময়ে সময়ে। আশা ছাড়েননি ফ্লোরেন্স। অবশেষে বাবা-মায়ের অনুমতি মিললে তিনি ১৮৫১ সালে নার্সের প্রশিক্ষণ নিতে জার্মানিতে উড়াল দেন। নার্স প্রশিক্ষণের জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। প্রায় ভিক্ষে করে জোগাড় করেছিলেন ৪৫ হাজার পাউন্ড। লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে নার্সিংকে সম্পূর্ণ পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ১৮৬০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘নাইটিঙ্গেল ট্রেনিং স্কুল’ যার ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল স্কুল অব নার্সিং’। ডা. এলিজাবেথ ব্ল্যাকওয়েলের সঙ্গে যৌথভাবে ১৮৬৭ সালে নিউইয়র্কে চালু করেন ‘উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ’।

ভারতবর্ষের গ্রামীণ মানুষের সেবায় এ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের (Florence Nightingale)। মানুষের সেবায় তাঁর দৃষ্টান্তমূলক অবদানের জন্য ১৮৮৩ সালে রাণী ভিক্টোরিয়া তাঁকে ‘রয়েল রেডক্রস’ সম্মানে সম্মানিত করেন। ১৯০৭ সালে প্রথম মহিলা হিসাবে ‘অর্ডার অব মেরিট’ সম্মানে সম্মানিত হন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। ১৯০৮ সালে পান লন্ডনের ‘অনারারি ফ্রিডম’ উপাধিও।

১১ দফা দাবিতে রাস্তায় প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষকরা

ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন হেড নার্স। ইংরেজ-তুর্কি নির্বিশেষে দু’দেশের আহত মুমূর্ষু সৈন্যদেরই দিনরাত ধরে প্রাণ ঢেলে সেবা করেন তিনি। গভীর রাতে হাসপাতালের করিডোরে রোগীদের প্রয়োজন দেখতে হাতে মোমবাতি নিয়ে তিনি হেঁটে বেড়াতেন। তাই এখনও মানুষ স্মরণে রেখেছেন লেডি উইথ ল্যাম্প-কে। ১৮৬০ সালে লন্ডনে বিশ্বের প্রথম বিজ্ঞানসম্মতভাবে তৈরি হয় নার্সিং শেখানোর স্কুল নাইটিঙ্গেল স্কুল অফ নার্সিং। এই স্কুল নির্মাণেও তাঁর অবদান ছিল।