আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছি। তাই আমাদের লক্ষ্য আর্থসামাজিক উন্নতি করা। দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করতে হবে। বাংলাদেশের অবস্থা যেন আরো দৃঢ় হয় আমরা সেই লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ পেয়েছি।

বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যাবে। আজ মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ১১ স্কোয়াড্রন এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যশোরের বিমানবাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন। দেশ গঠনে সবাইকে দেশপ্রেমিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার জন্য সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বর্তমানে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করব।

সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই নিজেদেরকে দেশপ্রেমিক ও নির্ভীক হিসেবে গড়ে তুলতে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বিশ্বায়নের এ যুগে যেকোনো দেশের জন্য একটি পেশাদার বিমানবাহিনী অপরিহার্য। তিনি একটি আধুনিক ও চৌকস বিমানবাহিনী গড়ে তোলা সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এ জন্য ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে যান। সেখান থেকে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিটা যেন আরো দৃঢ় হয় সে জন্য তাঁর সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। টানা কয়েক মেয়াদের সরকার পরিচালনায় আমরা আজকে উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস সারা বিশ্বের অর্থনীতির গতিকে স্থবির করে দিলেও তাঁর সরকার সীমিত সামর্থ্য নিয়েই এই অর্থনীতিকে গতিশীল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে।

করোনার কারণে সরকার মুজিববর্ষের অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়ন না করতে পারলেও সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন প্রতিটি গ্রামের মানুষ যেন শহরের সব সুবিধা পায় সেটা নিশ্চিতকরণ এবং তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া এবং চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা, সুপেয় পানি এবং স্যানিটেশনসহ পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা, চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি-এই সব কিছু নিয়েই আমরা ব্যাপক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যার সুফল বাংলাদেশ অবশ্যই পাবে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে দেশের মানুষের জন্য এটাই আমাদের উপহার থাকবে, প্রতিটি গৃহহারা মানুষ ঘর পাবে, প্রতি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বলবে এবং সবাই উন্নত জীবন পাবে, বলেন তিনি। এ সময় তিনি করোনার টিকা গ্রহণ করা হলেও মাস্ক ব্যবহার করা, হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো বিষয়গুলো মেনে চলতে দেশবাসীর প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিমানবাহিনী প্রধান মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদানের লক্ষ্যে ইউনিট কমান্ডারদের হাতে জাতীয় পতাকা হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় তাঁকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। বিমানবাহিনী প্রধান অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ ও জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, কভিড-১৯-এর কারণে উদ্ভুত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া লোকজনকে নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চার্টার্ড ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। লেবাননে সংঘটিত ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও বিমানবাহিনীর পরিবহন বিমানের মাধ্যমে মানবিক সহায়তা প্রেরণ করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারির মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য ব্যয়ে আনছে সম্মান ও মর্যাদা, যা বহিঃর্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। এই সুনাম ক্ষুণ্ণ রাখতে আপনারা একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবেন-এটাই আমার প্রত্যাশা।

তথ্যসূত্র:- কালের কন্ঠ