খনার জনপ্রিয় ১00 টি বচন (khanar bachan)

খনা জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী নারী যিনি বচন রচনায় পারদর্শী ছিলেন। তাঁর ভবিষ্যতবাণীগুলোই খনার বচন নামে বহুল পরিচিত এবং সমাদৃত। আনুমানিক ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল। কিংবদন্তি আছে, তিনি বাস করতেন পশ্চিমবঙ্গের অধুনা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাতের দেউলিয়া গ্রামে। একদিন পিতা বরাহ এবং পুত্র মিহির আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পরলে, খনা এ সমস্যার সমাধান দিয়ে রাজা বিক্রমাদিত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। গণনা করে খনার দেওয়া পূর্বাভাসে রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হতো বলে রাজা বিক্রমাদিত্য খনাকে দশম রত্ন হিসেবে আখ্যা দেন। খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। অসংখ্য খনার বচন যুগ যুগ ধরে গ্রাম-বাংলার জনজীবনের সাথে মিশে আছে।

তাঁর বচনগুলি ৪ ভাগে বিভক্ত:

১) কৃষিকাজের প্রথা ও কুসংস্কার।

২) কৃষিকাজ ফলিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান।

৩) আবহাওয়া জ্ঞান।

৪) শস্যের যত্ন সম্পর্কিত উপদেশ।
সর্বাধিক জনপ্রিয় খনার ১৮৫টি বচন নিম্নে সংগ্রথিত হল:

চিনিস বা না চিনিস

খুঁজে দেখে গরু কিনিস।

যদি বর্ষে পৌষে,

কড়ি হয় তুষে।

গরু ছাগলের মুখে বিষ।

চারা না খায় রাখিস দিশ।।

বেল খেয়ে খায় পানি,

জির বলে মইলাম আমি।

পুত্র ভাগ্যে যশ

কন্যা ভাগ্যে লক্ষী।

চৈত্রে দিয়া মাটি

বৈশাখে কর পরিপাটি।

জ্যৈষ্ঠে খরা, আষাঢ়ে ভরা

শস্যের ভার সহে না ধরা।

ভাদ্রের চারি, আশ্বিনের চারি

কলাই করি যত পারি।

আউশ ধানের চাষ

লাগে তিন মাস।

১০

সকাল শোয় সকাল ওঠে

তার কড়ি না বৈদ্য লুটে।

১১

যে চাষা খায় পেট ভরে

গরুর পানে চায় না ফিরে

গরু না পায় ঘাস পানি

ফলন নাই তার হয়রানি।
১২

দিনের মেঘে ধান,

রাতের মেঘে পান।
১৩

বার বছরে ফলে তাল,

যদি না লাগে গরু নাল।

১৪

সকল গাছ কাটিকুটি

কাঁঠাল গাছে দেই মাটি।
১৫

একে তে নাচুনী বুড়ি,

তার উপর ঢোলের বারি।

১৬

দশে মিলে করি কাজ

হারি জিতি নাহি লাজ।

১৭

যা করিবে বান্দা তা-ই পাইবে।

সুই চুরি করিলে কুড়াল হারাইবে।

১৮

যাও পাখি বলো তারে

সে যেন ভুলেনা মোরে।

১৯

ফুল তুলিয়া রুমাল দিলাম যতন করি রাখিও।

আমার কথা মনে ফইল্লে রুমাল খুলি দেখিও।

২০

মেয়ে নষ্ট ঘাটে,

ছেলে নষ্ট হাটে।

২১

খালি পেটে পানি খায়

যার যার বুঝে খায়।

২২

তেলা মাথায় ঢালো তেল,

শুকনো মাথায় ভাঙ্গ বেল।
২৩

সাত পুরুষে কুমাড়ের ঝি,

সরা দেইখা কয়, এইটা কি?

২৪

আষাঢ় মাসে বান্ধে আইল

তবে খায় বহু শাইল।
২৫

নিজের বেলায় আটিঁগাটি,

পরের বেলায় চিমটি কাটি।

২৬

না পাইয়া পাইছে ধন;

বাপে পুতে কীর্তন।

২৭

যে না শোনে খনার বচন

সংসারে তার চির পচন।
২৮

বাঁশ মরে ফুলত,

মানুষ মরে ভুলত।
২৯

সুপারীতে গোবর, বাশে মাটি

অফলা নারিকেল শিকর কাটি।

৩০

তাল বাড়ে ঝোঁপে

খেজুর বাড়ে কোপে।

৩১

চাষী আর চষা মাটি

এ দু’য়ে হয় দেশ খাঁটি।

৩২

গাই পালে মেয়ে

দুধ পড়ে বেয়ে।

৩৩

সোমে ও বুধে না দিও হাত

ধার করিয়া খাইও ভাত।

৩৪

পুকুরে তে পানি নাই, পাতা কেনো ভাসে

যার কথা মনে করি সেই কেনো হাসে?

৩৫

গাঙ দেখলে মুত আসে

নাঙ দেখলে হাস আসে (নাঙ মানে – স্বামী)

৩৬

ছায়া ভালো ছাতার তল,

বল ভালো নিজের বল।

৩৭

খনা বলে শুনে যাও

নারিকেল মুলে চিটা দাও

গাছ হয় তাজা মোটা

তাড়াতাড়ি ধরে গোটা।

৩৮

ভাত দেবার মুরোদ নাই,

কিল দেবার গোসাঁই।

৩৯

পারেনা ল ফালাইতে

উইঠা থাকে বিয়ান রাইতে।

৪০

আখ আদা রুই

এই তিন চৈতে রুই।

৪১

পটল বুনলে ফাগুনে

ফলন বাড়ে দ্বিগুণে।

৪২

খনা বলে চাষার পো

শরতের শেষে সরিষা রো।

৪৩

সূর্যের চেয়ে বালি গরম!!

নদীর চেয়ে প্যাক ঠান্ডা!!

৪৪

যদি থাকে বন্ধুরে মন

গাং সাঁতরাইতে কতক্ষণ।

৪৫

ঘরের কোনে মরিচ গাছ লাল মরিচ ধরে,

তোমার কথা মনে হলে চোখের পানি পড়ে!

৪৬

খনা ডেকে বলে যান

রোদে ধান ছায়ায় পান।

৪৭

হাত বিশ করি ফাঁক

আম কাঁঠাল পুঁতে রাখ।

৪৮

সমানে সমানে দোস্তি

সমানে সমানে কুস্তি।

৪৯

হোলা গোশশা অইলে বাশশা,

মাইয়া গোশশা অইলে বেইশশা।

৫০

কি কর শ্বশুর মিছে খেটে

ফাল্গুনে এঁটে পোত কেটে

বেড়ে যাবে ঝাড়কি ঝাড়

কলা বইতে ভাংগে ঘাড়।

৫১

উঠান ভরা লাউ শসা

ঘরে তার লক্ষীর দশা।

৫২

যদি বর্ষে মাঘের শেষ

ধন্যি রাজা পুণ্যি দেশ।

৫৩

হইবো পুতে ডাকবো বাপ

তয় পুরবো মনর থাপ।

৫৪

সবল গরু, গভীর চাষ

তাতে পুরে চাষার আশ।

৫৫

ডাঙ্গা নিড়ান বান্ধন আলি

তাতে দিও নানা শালি।

৫৬

ডাকে পাখী, না ছাড়ে বাসা,

খনা বলে, সেই তো ঊষা।

৫৭

অঙ্কস্য বামা গতি।

৫৮

কাঁচা রোপা শুকায়

ভুঁইয়ে ধান ভুঁইয়ে লুটায়।

৫৯

কিল আর তেল পড়লেই গেল।

৬০

যদি বর্ষে গাল্গুনে

চিনা কাউন দ্বিগুনে।

৬১

শাল সত্তর, আসন আশি

জাম বলে পাছেই আছি।

তাল বলে যদি পাই কাত

বার বছরে ফলে একরাত।

৬২

দিনে রোদ রাতে জল

দিন দিন বাড়ে ধানের বল।

৬৩

মাঘ মাসে বর্ষে দেবা

রাজ্য ছেড়ে প্রজার সেবা।

৬৪

ঘন সরিষা বিরল তিল।

ডেঙ্গে ডেঙ্গে কাপাস।।

এমন করে বুনবি শন।

না লাগে বাতাস।।

৬৫

সেচ দিয়ে করে চাষ,

তার সবজি বার মাস।

৬৬

ক্ষেত আর পুত।

যত্ন বিনে যমদূত।।

৬৭

ফল খেয়ে জল খায়

জম বলে আয় আয়।

৬৮

কাল ধানের ধলা পিঠা,

মা’র চেয়ে মাসি মিঠা।

৬৯

বেঙ ডাকে ঘন ঘন

শীঘ্র হবে বৃষ্টি জান।

৭০

যদি বর্ষে মাঘের শেষ,

ধন্যি রাজার পুণ্য দেশ।।

যদি বর্ষে ফাগুনে,

রাজা যায় মাগুনে।।

৭১

যুগরে খাইছে ভূতে

বাপরে মারে পুতে।

৭২

শোনরে বাপু চাষার পো

সুপারী বাগে মান্দার রো৷

মান্দার পাতা পচলে গোড়ায়

ফড়ফড়াইয়া ফল বাড়ায়।

৭৩

গাছে গাছে আগুন জ্বলে

বৃষ্টি হবে খনায় বলে।

৭৪

যদি হয় চৈতে বৃষ্টি

তবে হবে ধানের সৃষ্টি।

৭৫

নিত্যি নিত্যি ফল খাও,

বদ্যি বাড়ি নাহি যাও।

৭৬

শুধু পেটে কুল,

ভর পেটে মূল।

৭৭

সাত হাতে, তিন বিঘাতে

কলা লাগাবে মায়ে পুতে।

কলা লাগিয়ে না কাটবে পাত,

তাতেই কাপড় তাতেই ভাত।

৭৮

যদি ঝরে কাত্তি।

সোনা রাত্তি রাত্তি।।

৭৯

মিললে মেলা।

না মিললে একলা একলা ভালা!

৮০

শোন শোন চাষি ভাই

সার না দিলে ফসল নাই।

৮১

চালায় চালায় কুমুড় পাতা

লক্ষ্মী বলেন আছি তথা।

৮২

বারো মাসে বারো ফল

না খেলে যায় রসাতল।

৮৩

সকাল শোয় সকাল ওঠে

তার কড়ি না বৈদ্য লুটে।

৮৪

গাছগাছালি ঘন রোবে না

গাছ হবে তার ফল হবে না।

৮৫

তিন নাড়ায় সুপারী সোনা,

তিন নাড়ায় নারকেল টেনা,

তিন নাড়ায় শ্রীফল বেল,

তিন নাড়ায় গেরস্থ গল।

৮৬

সোল বোয়ালের পোনা,

যার যারটা তার তার কাছে সোনা।

৮৭

আলো হাওয়া বেঁধো না

রোগে ভোগে মরো না।

৮৮

যদি হয় সুজন এক পিড়িতে নয় জন।

যদি হয় কুজন নয় পিড়িতে নয় জন।

৮৯

পাঁচ রবি মাসে পায়।

ঝরায় কিংবা খরায় পায়।

৯০

ক্ষেত আর পুত,

যত্ন বিনে যমদূত।

৯১

আমি অটনাচার্যের বেটি

গনতে গাঁথতে কারে বা আঁটি।

৯২

যত জ্বালে ব্যঞ্জন মিষ্ট

তত জ্বালে ভাত নষ্ট।

৯৩

বাদল বামুন বান,

দক্ষিণা পেলেই যান।

৯৪

পৌষের কুয়া বৈশাখের ফল।

য’দ্দিন কুয়া ত’দ্দিন জল।

শনিতে সাত মঙ্গলে/(বুধ) তিন।

আর সব দিন দিন।

৯৫

পাঁচ রবি মাসে পায়,

ঝরা কিংবা খরায় যায়।

৯৬

গাঁ গড়ানে ঘন পা।

যেমন মা তেমন ছা।।

থেকে বলদ না বয় হাল,

তার দুঃখ সর্ব্বকাল।।

৯৭

কাচায় না নোয়ালে বাশ,

পাকলে করে ঠাস ঠাস!

৯৮

ভাই বড়ো ধন, রক্তের বাঁধন

যদি ও পৃথক হয়, নারীর কারন।

৯৯

জ্যৈষ্ঠে শুকো আষাঢ়ে ধারা।

শস্যের ভার না সহে ধরা।

১০০

তাল, তেঁতুল, কুল

তিনে বাস্তু নির্মূল।

১০১

এক পুরুষে রোপে তাল,

অন্য পুরুষি করে পাল।

তারপর যে সে খাবে,

তিন পুরুষে ফল পাবে।

১০২

হলে ফুল কাট শনা।

পাট পাকিলে লাভ দ্বিগুণা।।

১০৩

আম খেয়ে খায় পানি,

পেঁদি বলে আমি ন জানি।

১০৪

হাতিরও পিছলে পাও।

সুজনেরও ডুবে নাও।

১০৫

চৈত্রেতে থর থর

বৈশাখেতে ঝড় পাথর

জ্যৈষ্ঠতে তারা ফুটে

তবে জানবে বর্ষা বটে।

১০৬

যদি অশ্বি কুয়া ধরে,

তবে ধানগাছে পোকা ধরে।

১০৭

হাঁচি জেটি পড়ে যবে,

অষ্ট গুণ তার লভ্য না হবে।

১০৮

তিনশ ষাট ঝাড় কলা রুয়ে

থাকগা চাষি মাচায় শুয়ে,

তিন হাত অন্তর এক হাত

খাই কলা পুতগে চাষা ভাই।

১০৯

গরুর পিঠে তুললে হাত।

গিরস্থে কভু পায় না ভাত।।

গাই দিয়া বায় হাল

দু:খ তার চিরকাল।

১১০

সরিষা বনে কলাই মুগ,

বুনে বেড়াও চাপড়ে বুক।

১১১

দিন থাকতে বাঁধে আল।

তবে খায় তিন শাল।।

বারো পুত তেরো নাতি।

তবে করো বোরো খেতি।।

১১২

আম নিম জামের ডালে

দাঁত মাজও কুতুহলে।

১১৩

পূর্ণিমা আমাবস্যায় যে ধরে হাল,

তার দুঃখ হয় চিরকাল।

যার বলদের হয় বাত,

তার ঘরে না থাকে ভাত।

খনা বলে আমার বাণী,

যে চষি তার হবে জানি।

১১৪

ভাদ্র আশ্বিনে বহে ঈশান,

কাঁধে কোদালে নাচে কৃষাণ।

১১৫

ঘোল, কুল, কলা

তিনে নাশে গলা।

১১৬

তপ্ত অম্ল ঠাণ্ডা দুধ

যে খায় সে নির্বোধ।

১১৭

ফাল্গুন না রুলে ওল,

শেষে হয় গণ্ডগোল।

১১৮

বাড়ীর কাছে ধান পা,

যার মার আগে ছা।

চিনিস বা না চিনিস,

ঘুঁজি দেখে কিনিস।

১১৯

উনো বর্ষায় দুনো শীত।

১২০

আউশের ভুই বেলে,

পাটের ভুঁই আটালে।

১২১

পান লাগালে শ্রাবণে,

খেয়ে না কুলায় রাবণে।

১২২

শীষ দেখে বিশ দিন,

কাটতে কাটতে দশদিন।

ওরে বেটা চাষার পো,

ক্ষেতে ক্ষেতে শালী রো।

১২৩

গোবর দিয়া কর যতন,

ফলবে দ্বিগুণ ফসল রতন।

১২৪

মাঘে মুখী,

ফাল্গুনে চুখি,

চৈতে লতা,

বৈশাখে পাতা।

১২৫

ভাদরের চারি আশ্বিনের চারি,

কলাই রোব যত পারি।

১২৬

আষাঢ়ের পানি।

তলে দিয়া গেলে সার।

উপরে দিয়া গেলে ক্ষার।।

১২৭

যে চাষা খায় পেট ভরে।

গরুর পানে চায় না ফিরে।

গরু না পায় ঘাস পানি।

ফলন নাই তার হয়রানি।।

১২৮

খনা বলে শুন কৃষকগণ

হাল লয়ে মাঠে বেরুবে যখন

শুভ দেখে করবে যাত্রা

না শুনে কানে অশুভ বার্তা।

ক্ষেতে গিয়ে কর দিক নিরূপণ,

পূর্ব দিক হতে হাল চালন

নাহিক সংশয় হবে ফলন।

১২৯

আকাশে কোদালীর বাউ। ও

গো শ্বশুড় মাঠে যাও।।

মাঠে গিয়া বাঁধো আলি।

বৃষ্টি হবে আজি কালি।।

১৩০

খনা ডাকিয়া কন,

রোদে ধান ছায়ায় পান।

১৩১

বৎসরের প্রথম ঈশানে বয়,

সে বৎসর বর্ষা হবে খনা কয়।

১৩২

যদি থাকে টাকা করবার গোঁ।

চৈত্র মাসে ভুট্টা দিয়ে রো।।

১৩৩

যদি বর্ষে কাতি,

রাজা বাঁধে হাতি।

১৩৪

আম লাগাই জাম লাগাই কাঁঠাল সারি সারি-

বারো মাসের বারো ফল নাচে জড়াজড়ি।

১৩৫

মেঘ করে রাত্রে হয় জল।

তবে মাঠে যাওয়াই বিফল।।

১৩৬

ফাল্গুনে আগুন চৈতে মাটি,

বাঁশ বলে শীঘ্র উঠি।

১৩৭

ভরা হতে শুন্য ভাল যদি ভরতে যায়,

আগে হতে পিছে ভাল যদি ডাকে মায়।

মরা হতে তাজা ভাল যদি মরতে যায়,

বাঁয়ে হতে ডাইনে ভাল যদি ফিরে চায়।

বাঁধা হতে খোলা ভাল মাথা তুলে চায়,

হাসা হতে কাঁদা ভাল যদি কাঁদে বাঁয়।

১৩৮

ফাল্গুনে আট, চৈতের আট,

সেই তিল দায়ে কাট।

১৩৯

ডাক দিয়ে বলে মিহিরের স্ত্রী, শোন পতির পিতা,

ভাদ্র মাসে জলের মধ্যে নড়েন বসুমাতা।

রাজ্য নাশে, গো নাশে, হয় অগাধ বান,

হাতে কাটা গৃহী ফেরে কিনতে না পান ধান।

১৪০

শুনরে বেটা চাষার পো, বৈশাখ জ্যৈষ্ঠে হলুদ রো।

আষাঢ় শাওনে নিড়িয়ে মাটি,ভাদরে নিড়িয়ে করবে খাঁটি।

হলুদ রোলে অপর কালে, সব চেষ্টা যায় বিফলে।

১৪১

বৈশাখের প্রথম জলে,

আশুধান দ্বিগুণ ফলে।

১৪২

কি করো শ্বশুর লেখা জোখা,

মেঘেই বুঝবে জলের রেখা।

কোদাল কুড়ুলে মেঘের গাঁ,

মধ্যে মধ্যে দিচ্ছে বা।

কৃষককে বলোগে বাঁধতে আল,

আজ না হয় হবে কাল।

১৪৩

চৈতের কুয়া আমের ক্ষয়

তাল তেঁতুলের কিবা হয়।

১৪৪

বিশ হাত করি ফাঁক,

আম কাঁঠাল পুঁতে রাখ।

গাছ গাছি ঘন রোবে না,

ফল তাতে ফলবে না।

১৪৫

শুনরে বাপু চাষার বেটা

মাটির মধ্যে বেলে যেটা

তাতে যদি বুনিস পটল

তাতে তোর আশার সফল।

১৪৬

লাঙ্গলে না খুঁড়লে মাটি,

মই না দিলে পরিপাটি

ফসল হয় না কান্নাকাটি।

১৪৭

ফাগুনে আগুন, চৈতে মাট

বাঁশ বলে শীঘ্র উঠি।

১৪৮

হালে নড়বড়, দুধে পানি

লক্ষ্মী বলে চললাম আমি।

১৪৯

গো নারিকেল নেড়ে রো

আমা টুকরা কাঁঠাল ভো।

১৫০

যদি না হয় আগনে বৃষ্টি

তবে না হয় কাঁঠালের সৃষ্টি।

১৫১

মঙ্গলে ঊষা বুধে পা

যথা ইচ্ছা তথা যা।

১৫২

বাঁশের ধারে হলুদ দিলে

খনা বলে দ্বিগুণ বাড়ে।

১৫৩

আমে ধান তেঁতুলে বান।

১৫৪

বার পুত, তের নাতি

তবে কর কুশার ক্ষেতি।

১৫৫

বামুন বাদল বান

দক্ষিণা পেলেই যান।

১৫৬

গাজর, গন্ধি, সুরী

তিন বোধে দূরী।

১৫৭

যদি না হয় আগনে পানি,

কাঁঠাল হয় টানাটানি।

১৫৮

খনা বলে শোনভাই

তুলায় তুলা অধিক পাই।

১৫৯

সবলা গরু সুজন পুত

রাখতে পারে খেতের জুত।

১৬০

খনা বলে শুনে যাও

নারিকেল মুলে চিটা দাও

গাছ হয় তাজা মোটা

তাড়াতাড়ি ধরে গোটা

১৬১

ঘন সরিষা পাতলা রাই

নেংগে নেংগে কার্পাস পাই।

১৬২

আগে বাঁধবে আইল

তবে রুবে শাইল।

১৬৩

তিন শাওনে পান

এক আশ্বিনে ধান।

১৬৪

থাক দুখ পিতে,(পিত্তে)

ঢালমু দুখ মাঘ মাসের শীতে।

১৬৫

চোরের মার বড় গলা

লাফ দিয়ে খায় গাছের কলা।

১৬৬

ভাদরে করে কলা রোপন

স্ববংশে মরিল রাবণ।

১৬৭

পরের বাড়ির পিঠা

খাইতে বড় ই মিঠা।

১৬৮

ডাক ছেড়ে বলে রাবণ

কলা রোবে আষাঢ় শ্রাবণ।

১৬৯

নদীর জল ঘোলাও ভালো,

জাতের মেয়ে কালোও ভালো।

১৭০

দাতার নারিকেল, বখিলের বাঁশ

কমে না বাড়ে বারো মাস।

১৭১

বিপদে পড় নহে ভয়

অভিজ্ঞতায় হবে জয়।

১৭২

পূর্ব আষাঢ়ে দক্ষিণা বয়

সেই বৎসর বন্যা হয়।

১৭৩

জৈষ্ঠতে তারা ফুটে

তবে জানবে বর্ষা বটে।

১৭৪

মংগলে উষা বুধে পা

যথা ইচ্ছা তথা যা।

১৭৫

খরা ভুয়ে ঢালবি জল

সারাবছর পাবি ফল।

১৭৬

গাছ-গাছালি ঘন রোবে না

গাছ হবে তাতে ফল হবে না।

১৭৭

উত্তর দুয়ারি ঘরের রাজা

দক্ষিণ দুয়ারি তাহার প্রজা।

পূর্ব দুয়ারির খাজনা নাই

পশ্চিম দুযারির মুখে ছাই।

১৭৮

আষাঢ়ে পনের শ্রাবণে পুরো

ধান লাগাও যত পারো।

১৭৯

ষোল চাষে মূলা, তার অর্ধেক তুলা

তার অর্ধেক ধান, তার অর্ধেক পান,

খনার বচন, মিথ্যা হয় না কদাচন।

১৮০

চৈত্রে চালিতা,

বৈশাখে নালিতা,

আষাড়ে………

ভাদ্রে তালের পিঠা।

আর্শ্বিনে ওল,

কার্তিকে কৈয়ের ঝুল।

১৮১

গরু-জরু-ক্ষেত-পুতা

চাষীর বেটার মূল সুতা।

১৮২

চাষে মুলা তার

অর্ধেক তুলা তার

অর্ধেক ধান

বিনা চাষে পান।

১৮৩

চৈত্রে কুয়াশা ভাদ্রে বান।

সেই বর্ষে মরক জান।

১৮৪

শূন্য কলসী শুকনা না, শুকনা ডালে ডাকে কাক।

যদি দেখ মাকুন্দ চোপা, এক পা না যেও বাপ।

১৮৫

চৈতে গিমা তিতা,

বৈশাখে নালিতা মিঠা,

জ্যৈষ্ঠে অমৃতফল আষাঢ়ে খৈ,

শায়নে দৈ।

ভাদরে তালের পিঠা,

আশ্বিনে শশা মিঠা,

কার্তিকে খৈলসার ঝোল,

অগ্রাণে ওল।

পৌষে কাঞ্ছি, মাঘে তেল,

ফাল্গুনে পাকা বেল।

কিছু খনার (ক্ষনার) বচন

লিখেছেন ANIRUDDHO PRASAD । ২৩ মার্চ, ২০১৫ ।

503বার পঠিত

০১.
পূর্ব আষাঢ়ে দক্ষিণা বয়,
সেই বৎসর বন্যা হয়।
০২.
মঙ্গলে ঊষা বুধে পা,
যথা ইচ্ছা তথা যা।
০৩.
পাঁচ রবি মাসে পায়,
ঝরা কিংবা খরায় যায়।
০৪.
বামুন বাদল বান,
দক্ষিণা পেলেই মান।
০৫.
বেঙ ডাকে ঘন ঘন,
শীঘ্র হবে বৃষ্টি জান।
০৬.
আউশ ধানের চাষ,
লাগে তিন মাস।
০৭.
খনা বলে শুন কৃষকগণ
হাল লয়ে মাঠে বেরুবে যখন
শুভ দেখে করবে যাত্রা
না শুনে কানে অশুভ বার্তা।
ক্ষেতে গিয়ে কর দিক নিরূপণ,
পূর্ব দিক হতে হাল চালন
নাহিক সংশয় হবে ফলন।
০৮.
যদি বর্ষে ফাল্গুনে
চিনা কাউন দ্বিগুণে।
০৯.
যদি হয় চৈতে বৃষ্টি
তবে হবে ধানের সৃষ্টি।
১০.
চালায় চালায় কুমুড় পাতা,
লক্ষ্মী বলেন আছি তথা।
১১.
আখ, আদা, পুঁই,
এই তিনে চৈতি রুই।
১২.
চৈত্রে দিয়া মাটি,
বৈশাখে কর পরিপাটি।
১৩.
দাতার নারিকেল, বখিলের বাঁশ,
কমে না বাড়ে বারো মাস।
১৪.
সোমে ও বুধে না দিও হাত,
ধার করিয়া খাইও ভাত।
১৫.
ভরা হতে শুন্য ভাল যদি ভরতে যায়,
আগে হতে পিছে ভাল যদি ডাকে
মায়।
মরা হতে তাজা ভাল যদি মরতে
যায়,
বাঁয়ে হতে ডাইনে ভাল যদি
ফিরে চায়।
বাঁধা হতে খোলা ভাল মাথা
তুলে চায়,
হাসা হতে কাঁদা ভাল যদি কাঁদে
বাঁয়।
১৬.
জৈষ্ঠতে তারা ফুটে,
তবে জানবে বর্ষা বটে।
১৭.
কি করো শ্বশুর লেখা জোখা,
মেঘেই বুঝবে জলের রেখা।
কোদাল কুড়ুলে মেঘের গাঁ,
মধ্যে মধ্যে দিচ্ছে বা।
কৃষককে বলোগে বাঁধতে আল,
আজ না হয় হবে কাল।
১৮.
বাঁশের ধারে হলুদ দিলে,
খনা বলে দ্বিগুণ বাড়ে।
১৯.
গাই পালে মেয়ে
দুধ পড়ে বেয়ে।
২০.
শুনরে বাপু চাষার বেটা,
মাটির মধ্যে বেলে যেটা।
তাতে যদি বুনিস পটল,
তাতে তোর আশার সফল।
২১.
যদি বর্ষে মাঘের শেষ,
ধন্য রাজার পূণ্য দেশ।
২২.
মাঘ মাসে বর্ষে দেবা,
রাজ্য ছেড়ে প্রজার সেবা।
২৩.
চৈতের কুয়া আমের ক্ষয়,
তাল তেঁতুলের কিবা হয়।
২৪.
আমে ধান, তেঁতুলে বান।
২৫.
সাত হাতে, তিন বিঘাতে
কলা লাগাবে মায়ে পুতে।
কলা লাগিয়ে না কাটবে পাত,
তাতেই কাপড় তাতেই ভাত।
২৬.
ডাক ছেড়ে বলে রাবণ,
কলা রোবে আষাঢ় শ্রাবণ।
২৭.
কি কর শ্বশুর মিছে খেটে,
ফাল্গুনে এঁটে পোত কেটে।
বেড়ে যাবে ঝাড়কি ঝাড়,
কলা বইতে ভাঙবে ঘাড়।
২৮.
ভাদরে করে কলা রোপন,
সবংশে মরিল রাবণ।
২৯.
গো নারিকেল নেড়ে রো,
আম টুকরো কাঁঠাল ভো।
৩০.
সুপারীতে গোবর, বাঁশে মাটি,
অফলা নারিকেল শিকর কাটি।
৩১.
খনা বলে শুনে যাও,
নারিকেল মূলে চিটা দাও।
গাছ হয় তাজা মোটা,
তাড়াতাড়ি ধরে গোটা।
৩২.
যদি না হয় আগনে পানি,
কাঁঠাল হয় টানাটানি।
৩৩.
বিশ হাত করি ফাঁক,
আম কাঁঠাল পুঁতে রাখ।
গাছ গাছি ঘন রোবে না,
ফল তাতে ফলবে না।
৩৪.
বার বছরে ফলে তাল,
যদি না লাগে গরু নাল।
৩৫.
তাল বাড়ে ঝোঁপে,
খেজুর বাড়ে কোপে।
৩৬.
এক পুরুষে রোপে তাল,
অন্য পুরুষি করে পাল।
তারপর যে সে খাবে,
তিন পুরুষে ফল পাবে।
৩৭.
নিত্যি নিত্যি ফল খাও,
বদ্যি বাড়ি নাহি যাও।
৩৮.
চৈত্রেতে থর থর
বৈশাখেতে ঝড় পাথর
জ্যৈষ্ঠতে তারা ফুটে
তবে জানবে বর্ষা বটে।
৩৯.
জল খেয়ে ফল খায়,
যম বলে আয় আয়।
৪০.
দিনের মেঘে ধান,
রাতের মেঘে পান।
৪১.
বেল খেয়ে খায় পানি,
জির বলে মইলাম আমি।
৪২.
আম খেয়ে খায় পানি,
পেঁদি বলে আমি ন জানি।
৪৩.
শুধু পেটে কুল,
ভর পেটে মূল।
৪৪.
চৈতে গিমা তিতা,
বৈশাখে নালিতা মিঠা,
জ্যৈষ্ঠে অমৃতফল আষাঢ়ে খৈ,
শায়নে দৈ।
ভাদরে তালের পিঠা,
আশ্বিনে শশা মিঠা,
কার্তিকে খৈলসার ঝোল,
অগ্রাণে ওল।
পৌষে কাঞ্ছি, মাঘে তেল,
ফাল্গুনে পাকা বেল।
৪৫.
তিন নাড়ায় সুপারী সোনা,
তিন নাড়ায় নারকেল টেনা,
তিন নাড়ায় শ্রীফল বেল,
তিন নাড়ায় গেরস্থ গেল।
৪৬.
আম লাগাই জাম লাগাই
কাঁঠাল সারি সারি-
বারো মাসের বারো ফল
নাচে জড়াজড়ি।
৪৭.
তাল, তেঁতুল, কুল
তিনে বাস্তু নির্মূল।
৪৮.
ঘোল, কুল, কলা
তিনে নাশে গলা।
৪৯.
আম নিম জামের ডালে
দাঁত মাজও কুতুহলে।
৫০.
সকল গাছ কাটিকুটি
কাঁঠাল গাছে দেই মাটি।
৫১.
শাল সত্তর, আসন আশি
জাম বলে পাছেই আছি।
তাল বলে যদি পাই কাত
বার বছরে ফলে একরাত।
৫২.
পূর্ণিমা আমাবস্যায় যে ধরে হাল,
তার দুঃখ হয় চিরকাল।
তার বলদের হয় বাত
তার ঘরে না থাকে ভাত।
খনা বলে আমার বাণী,
যে চষে তার হবে জানি।
৫৩.
থেকে বলদ না বয় হাল,
তার দুঃখ চিরকাল।
৫৪.
বাপ বেটায় চাষ চাই,
তা অভাবে সহোদর ভাই।
৫৫.
ভাদরের চারি আশ্বিনের চারি,
কলাই রোব যত পারি।
৫৬.
ফাল্গুন না রুলে ওল,
শেষে হয় গণ্ডগোল।
৫৭.
মাঘে মুখী, ফাল্গুনে চুখি,
চৈতে লতা, বৈশাখে পাতা।
৫৮.
সরিষা বনে কলাই মুগ,
বুনে বেড়াও চাপড়ে বুক।
৫৯.
গোবর দিয়া কর যতন,
ফলবে দ্বিগুণ ফসল রতন।
৬০.
লাঙ্গলে না খুড়লে মাটি,
মই না দিলে পরিপাটি,
ফসল হয় না কান্নাকাটি।
৬১.
খনা বলে চাষার পো
শরতের শেষে সরিষা রো।
৬২.
সেচ দিয়ে করে চাষ,
তার সবজি বার মাস।
৬৩.
তিনশ ষাট ঝাড় কলা রুয়ে
থাকগা চাষি মাচায় শুয়ে,
তিন হাত অন্তর এক হাত খাই
কলা পুতগে চাষা ভাই।
৬৪.
বৎসরের প্রথম ঈশানে বয়,
সে বৎসর বর্ষা হবে খনা কয়।
৬৫.
পটল বুনলে ফাল্গুনে,
ফল বাড়ে দ্বিগুণে।
৬৬.
উঠান ভরা লাউ শসা,
খনা বলে লক্ষ্মীর দশা।
৬৭.
শুনরে বেটা চাষার পো,
বৈশাখ জ্যৈষ্ঠে হলুদ রো।
আষাঢ় শাওনে নিড়িয়ে মাটি,
ভাদরে নিড়িয়ে করবে খাঁটি।
হলুদ রোলে অপর কালে,
সব চেষ্টা যায় বিফলে।
৬৮.
পান লাগালে শ্রাবণে,
খেয়ে না কুলায় রাবণে।
৬৯.
ফাল্গুনে আগুন চৈতে মাটি,
বাঁশ বলে শীঘ্র উঠি।
৭০.
জ্যৈষ্ঠে খরা আষাঢ়ে ভরা,
শস্যের ভার সহে না ধরা।
৭১.
ভাদ্র আশ্বিনে বহে ঈশান,
কাঁধে কোদালে নাচে কৃষাণ।
৭২.
বৈশাখের প্রথম জলে,
আশুধান দ্বিগুণ ফলে।
৭৩.
বাড়ীর কাছে ধান পা,
যার মার আগে ছা।
চিনিস বা না চিনিস,
ঘুঁজি দেখে কিনিস।
৭৪.
শীষ দেখে বিশ দিন,
কাটতে কাটতে দশদিন।
ওরে বেটা চাষার পো,
ক্ষেতে ক্ষেতে শালী রো।
৭৫.
খনা ডাকিয়া কন,
রোদে ধান ছায়ায় পান।
৭৬.
গাই দিয়া বায় হাল,
দুঃখ তার চিরকাল।
৭৭.
তপ্ত অম্ল ঠাণ্ডা দুধ
যে খায় সে নির্বোধ।
৭৮.
ডাক দিয়ে বলে মিহিরের স্ত্রী,
শোন পতির পিতা,
ভাদ্র মাসে জলের মধ্যে নড়েন
বসুমাতা।
রাজ্য নাশে, গো নাশে, হয় অগাধ
বান,
হাতে কাটা গৃহী ফেরে কিনতে
না পান ধান।
৭৯.
ফাল্গুনে আট, চৈতের আট,
সেই তিল দায়ে কাট।
৮০.
ষোল চাষে মূলা, তার অর্ধেক তুলা,
তার অর্ধেক ধান, বিনা চাষে পান।
খনার বচন, মিথ্যা হয় না কদাচন।
৮১.
আশ্বিনে উনিশ, কার্তিকের উনিশ,
বাদ দিয়ে যত পারিস, মটর কলাই
বুনিস।
৮২.
চৈত বৈশাখে লাগাইয়া ঝাল,
সুখে কাটে বর্ষাকাল।
৮৩.
আরে বেটা চাষার পো
চৈত্র মাসে ভুট্টা রো।
৮৪.
আষাঢ়ে উৎপত্তি, শ্রাবণে যুবতী,
ভাদে পোয়াতী,
আশ্বিনে বুড়া,
কার্তিকে দেয় উড়া।
৮৫.
আসমান ফাঁড়া ফাঁড়া,
বাতাস বহে চৌধারা।
কৃষক ক্ষেতের বান্ধ আইল,
বৃষ্টি হইবে আইজ কাইল।
৮৬.
মাঘের মাটি হীরের কাঠি
ফাল্গুনের মাটি সোনা,
চৈতের মাটি যেমন তেমন
বৈশাখের মাটি নোনা।
৮৭.
মাঘ মাসে বর্ষে দেবা,
রাজায় ছাড়ে প্রজার সেবা।
খনার বাণী
মিথ্যা না হয় জানি।
৮৮.
ধানের গাছে শামুক পা,
বন বিড়ালী করে রা।
গাছে গাছে আগুন জ্বলে,
বৃষ্টি হবে খনায় বলে।
৮৯.
কচু বনে ছড়ালে ছাই,
খনা বলে তার সংখ্যা নাই।
৯০.
পশ্চিমের ধনু নিত্য খরা,
পূর্বের ধনু বর্ষে ঝরা।
৯১.
স্বর্গে দেখি কোদাল কোদাল
মধ্যে মধ্যে আইল,
ভাত খাইলাও শ্বশুর মশায়
বৃষ্টি হইবে কাইল।
৯২.
তিথি বারো, স্বনক্ষত্র মাসের
বারোদিন
একত্র করিয়া তারে সাতে করো
হীন,
একে শুভ, দুইয়ে লাভ, তিনে শত্রুক্ষয়
চতুর্থেতে কার্যসিদ্ধি, পঞ্চমে
সহায়,
ষষ্ঠে মৃত্যু, শূন্য হলে পায় বহু দুঃখ,
খনা বলে যাত্রা কভু নাহি সুখ।
৯৩.
চৈতের ধূলি, বৈশাখের পেঁকি
ধান হয় ঢেঁকি ঢেঁকি।
৯৪.
আগে বেঁধে দেবে আইল,
তবে তায় রুইবে শাইল।
৯৫.
ঊণা মাতে দুনা বল
অতি ভাতে রসাতল।
৯৬.
আউশের ভুঁই বেলে,
পাটের ভুঁই আঁটালে।
৯৭.
যদি বর্ষে আগনে, রাজা যায়
মাগনে,
যদি বর্ষে পৌষে, শস্য যায় তুষে।
৯৮.
মধুমাসে প্রথম দিবসে হয় যেইবার,
রবিশেষে মঙ্গল বর্ষে, দুর্ভিক্ষ
বুধবার,
সোম, শুক্র গুরু যার,
পৃথ্বী সয়না শস্যের ভার।
৯৯.
আঁধারে পড়ে চাঁদের কলা,
কতক কালা, কতক ধলা,
উত্তর উঁচু, দক্ষিণ কাত
ধারায় ধারায় ধানের হাত,
ধান-চাল দুই-ই সস্তা
মিষ্টি হবে লোকের কথা।
১০০.
যে গুটিকাপাত হয় সাগরের
তীরেতে,
সর্বদা মঙ্গল হয়, কহে জ্যোতিষেতে।
নানা শস্যে পরিপূর্ণ বসুন্ধরা হয়,
খনা কহে মিহিরকে, নাহিক সংশয়।

[কৃতজ্ঞতা: খনার বচন, নারীগ্রন্থ
প্রবর্তন, ঢাকা
পঞ্চম সংস্করণ ১১ জানুয়ারি, ২০০৭, ২৮
পৌষ, ১৪১৩]