অধ্যাপক এম এ সামাদ জীবনী, Prof. Dr.M A Samad biography Prof. Dr.M A Samad jiboni

অধ্যাপক এম এ সামাদ এর জন্ম ১৯৫৮ সালে টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর উপজেলার হাতিবান্ধা গ্রামে। ১৯৮২ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করে ৬ষ্ঠ বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকুরিতে যোগ দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইন্টারনাল মেডিসিন এবং নেফ্রোলজি বিষয়ে প্রশিক্ষণ লাভ করেন।

১৯৯৪ সালে মেডিসিনে এফসিপিএস ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি অর্জন করেন নেফ্রোলজি বিষয়ে ডক্টর অব মেডিসিন- এম,ডি। কিডনী বিভাগে অধ্যাপনা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, জাতীয় কিডনী রোগ ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ইংল্যান্ডের প্লাসগো রয়্যাল কলেজ হতে এফআরসিপি ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল এর কিডনী রোগ বিভাগের চীফ কনসালটেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান এবং ষ্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের মেডিক্যাল ফেকাল্টির অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। প্রতিষ্ঠা করেন সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘কিডনী এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি’ (ক্যাম্পস)।
সম্প্রতি ২০১২ সালের জানুয়ারীতে টাঙ্গাইলে ক্যাম্পস কিডনী ও ডায়ালাইসিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

কিডনী রোগ ও তার প্রতিরোধ সম্পর্কে ষাটেরও অধিক সচেতনতামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। ২০টিরও বেশি কিডনী রোগ সম্পর্কিত গবেষনামূলক প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কিডনী রোগ প্রতিরোধ ও জনগণের সরাসরি জিজ্ঞাসা সম্পর্কীয় বিভিন্ন টেলিভিশন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন, প্রিন্ট মিডিয়াতে কিডনী রোগ, প্রতিকার ও প্রতিরোধে নানান রকম লেখা-লেখি প্রকাশিত হয়ে আসছে। গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ উপস্থাপনের সুত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানী, ইতালী, পর্তুগাল, জাপান, কোরিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশের প্রখ্যাত কিডনি রোগ ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম, এ, সামাদ এখন আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে-এ সার্বক্ষনিক চিকিৎসা প্রদান করছেন..

Read More :.আনোয়ার খানের জীবনী

 

৭০ শতাংশ কিডনি নষ্ট হওয়ার আগে লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় না</h3>
৭০ শতাংশ কিডনি নষ্ট হওয়ার আগে কিডনি রোগের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় না। অপরদিকে এ রোগে আক্রান্ত ৯০ ভাগ মানুষ ব্যয়বহুল চিকিৎসার কারণে বিনা চিকিৎসায় অকালে প্রাণ হারান। রোববার “কিডনি সুস্থ রাখার উপায়” শীর্ষক একটি আলোচনা সভা এসব কথা বলেন ক্যাম্পসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ।

এবছরের বিশ্ব কিডনি দিবসের প্রতিপাদ্যের আলোকে তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই করতে হলে সচেতনতার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ করে চিকিৎসা ব্যয় কমানো যায়। আর সেই লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে সফল হতে হলে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে সরকারি-বেসরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাসমূহকে সমন্বিত উদ্যোগ ও কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে এবং সরকারি তত্ত্বাবধানে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান যুগের সবচেয়ে ক্ষতিকর রোগ হল ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ, নীরবে দেহের মধ্যে বাসা বেধে বিভিন্ন মরণঘাতী অসংক্রামক ব্যাধির জন্ম দেয়। আর এই ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ এবং আরও কিছু কারণে মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ৭০ শতাংশ কিডনি নষ্ট হওয়ার আগে কিডনি রোগের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয় না। অপরদিকে এ রোগে আক্রান্ত ৯০ ভাগ মানুষ ব্যয়বহুল চিকিৎসার কারণে বিনা চিকিৎসায় অকালে প্রাণ হারান। আমাদের অসচেতনতা ও সুস্থ জীবনধারা মেনে না চলার জন্য দিন দিন এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে।

দেশের জনস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে জাতীয়ভাবে সমন্বিত সচেতনতার প্রতি তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। অধ্যাপক ডাঃ এম এ সামাদ আরও উল্লেখ করেন, ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্থেই ক্যাম্পস গত ১৬ বছর ধরে গ্রামের হত-দরিদ্রদের মাঝে এই স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের আয়োজন করে আসছে।

এদিকে একই দিন প্রায় এক হাজারের অধিক চিকিৎসা বঞ্চিত রোগীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরামর্শ প্রদান, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ঔষধ সরবরাহ করেছে স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থা কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনটি ক্যাম্পস নামের একটি প্রতিষ্ঠান গত ১৬ বছর আয়োজন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরেও টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর থানার হাতিবান্ধা গ্রামের তালিমঘর প্রাঙ্গণে ‘‘ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প’’ এর মাধ্যমে অসহায় রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে, টাঙ্গাইল ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার দরিদ্র গ্রামবাসীগণের রোগ নির্ণয়ের জন্য রক্ত, প্রস্রাবসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয়। ২১ ফেব্রুয়ারির দিন রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আগত বিশেষজ্ঞসহ প্রায় ২০ জনের অধিক চিকিৎসক, দিনব্যাপী রোগীদের  চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র প্রদানসহ বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান করেন।

এছাড়াও দিনব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে “কিডনি সুস্থ রাখার উপায়” শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় কিডনি বিষয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাম্পসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ এম এ সামাদ।

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের মহামারীর কথা মাথায় রেখে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবার শুধুমাত্র সেবা প্রত্যাশীদের নিয়েই ক্যাম্পটি করা হয়। তবে প্রতি বছরেই ন্যায় এ বছরও উক্ত এলাকার রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। সমাজের প্রত্যেকে ক্যাম্পসের মতো মানবিক কর্মকাণ্ডে নিজেদের সাধ্যমতো অবদান রাখার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন। সমাজকর্মীরা বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে আয়োজিত এসব স্বেচ্ছাসেবী ও মানবিক কর্মকাণ্ডে সরকারী ও বিত্তবান শ্রেণীর মানুষদের সহযোগিতা খুব জরুরী।

ক্যাম্পসের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি বিশিষ্ট লেখিকা নাসরিন বেগম, স্বাস্থ্য সচেতনতা, সুষম খাবার ও সুস্থ জীবনধারা চর্চার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। ক্যাম্পস নির্বাহী পরিচালক রেজওয়ান সালেহীন, ক্যাম্পসের মানবিক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার নিমিত্তে আয়োজনে অংশগ্রহণকারী সকল নিবেদিত প্রাণ ও চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি কিডনি বিকল রোগীদের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক কাজে নিজেদের কর্মকাণ্ড নিরলসভাবে চালিয়ে যাওয়ার জন্য সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

এছাড়াও আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল হালিম, প্রিন্সিপাল, কুমুদিনী উইমেনস মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ডাঃ এ কে এম ফজলুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড রিসার্চ বাংলাদেশ, আমিন শরীফ সুপন, উপ-সচিব, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়, আওলাদ হোসেন, আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রক প্রমুখ।

ডেইলি নিউজ টাইমস বিডি ডটকম (Dailynewstimesbd.com)এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন করুন।