করোনায় গড় আয়ু এক বছর কমল যুক্তরাষ্ট্রে

করোনা মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রে গড় আয়ু এক বছর কমে হয়েছে ৭৭.৮ বছর। নারীর তুলনায় পুরুষের আয়ু কমেছে বেশি। নারীর ক্ষেত্রে যেখানে এক বছর কমে গড় আয়ু হয়েছে ৮০.৫ বছর, সেখানে পুরুষের গড় আয়ু ১.২ বছর কমে হয়েছে ৭৫.১ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের (সিডিসি) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত বছরের প্রথমার্ধের মৃত্যু সনদ বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি এ ফল জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ গড় আয়ু কমেছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজনের। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের আয়ু কমেছে তিন বছর। আর স্পেনীয় পুরুষদের ক্ষেত্রে কমেছে ২.৪ বছর। সিডিসির পরিসংখ্যান (মৃত্যু) বিভাগের প্রধান ড. রবার্ট অ্যান্ডারসন বলেছেন, করোনায় গড় আয়ুর ক্ষেত্রে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটেছে। এর আগে এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা দেয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে। মূলত করোনাজনিত বিপুল প্রাণহানির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে গড় আয়ুর বড় অবনমন হয়েছে। চলমান মহামারিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এরই মধ্যে চার লাখ ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় কৃষ্ণাঙ্গসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রাণহানির সংখ্যা তুলনামূলক অনেক বেশি।

এক হিসাবে দেখা গেছে, শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গদের তিন গুণ প্রাণ কেড়েছে করোনা। গত বছর ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশন প্রকাশিত বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, করোনায় কৃষ্ণাঙ্গদের অধিক মৃত্যুর ঘটনা সব বয়সীদের ক্ষেত্রেই ঘটেছে। সিডিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এলাকাভেদে করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ভিন্ন সময়ে। শুরুতে গ্রামীণ অঞ্চলের তুলনায় শহুরে লোকজন বেশি সংক্রমিত হয়েছে। অবশ্য গড় আয়ু কমার ক্ষেত্রে শুধু করোনা সংক্রমণের ঘটনাই দায়ী নয়, মহামারির শুরুতে ভুল ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহারও এ ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে। সাম্প্রতিককালে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বনিম্ন ৭৮.৯ বছর গড় আয়ু নথিবদ্ধ হয় ২০১৪ সালে।

অর্থাৎ বর্তমানে গড় আয়ু তার চেয়েও হ্রাস পেল। বেশির ভাগ ধনী দেশে ৮০ বছরকে গড় আয়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। মার্কিন সামরিক বাহিনীতে টিকায় অনাগ্রহ : পেন্টাগন কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, মার্কিন সামরিক বাহিনীতে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও টিকা নিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন এক-তৃতীয়াংশ সদস্য। ৯ লাখেরও বেশি সদস্য এখনো টিকা গ্রহণ করেননি। মূলত টিকার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিয়ে অনেকের মধ্যে সংশয় দেখা দেওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ব পরিস্থিতি : বৈশ্বিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাবে, গতকাল পর্যন্ত বিশ্বে ১১ কোটি আট লাখ মানুষ করোনা সংক্রমিত হয়েছে। এ সময়ে প্রাণহানি ২৪ লাখ ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে আর সেরে উঠেছে আট কোটি ৪৭ লাখ কভিড রোগী।

সূত্র : বিবিসি, এএফপি।