লাল-সবুজের হয়ে খেলাটা অনেক গর্বের ব্যাপার: তাসকিন

একসময় বাংলাদেশ দল কোনো সিরিজে খেলতে যাওয়ার আগে পরিকল্পনা করত কীভাবে নিজেদের স্পিন ঘূর্ণিতে ফেলে প্রতিপক্ষকে কাবু করা যায়। তবে সময় বদলাচ্ছে, যত দিন যাচ্ছে তত উন্নতি করছে বাংলাদেশের দলের পেস বোলিং ডিপার্টমেন্ট। আর এতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাসকিন আহমেদ।

অভিষেকের পর থেকে এ পেসার লম্বা সময় ইনজুরির কারণে কাটিয়েছেন দলের বাইরে। শুধু তাই নয়, সবশেষ ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও এই কারণে বাদ পরেছিলেন টাইগার স্কোয়াড থেকে। সেসময় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অশ্রুশিক্ত চোখে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন তাসকিন, সেই মুহূর্ত এখনো হয়তো মনে আছে অনেকের। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে নতুন করে রূপে ফিরিয়ে এনেছেন তিনি। বিশেষ করে গেল দুই বছর ধরে তো টাইগারদের আস্থার নামই হয়ে উঠেছেন তিনি।

আরো পড়ুন:অসহায় প্রতিবন্ধী শিশুর স্কুল রক্ষার দাবিতে কেরানীগঞ্জ অটিস্টিক বিদ্যালয় অভিভাবকরা মানববন্ধন ও অনশন করেন শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে। 

চার বছর পর আবার দুয়ারে কড়া নাড়ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ, আর এবারের টাইগার স্কোয়াডে যে তিনি থাকছেন তা চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়। এর আগে বাংলাদেশের সামনে রয়েছে আফগানিস্তান সিরিজ এবং এশিয়া কাপ আর এর জন্যও নিজেকে প্রস্তুত করছেন তাসকিন।

সর্বশেষ আয়ারল্যান্ড সিরিজেও ইনজুরির কারণে তাসকিন ছিলেন দলের বাইরে। বর্তমানে নিজেকে ফিরে পেতে চালিয়ে যাচ্ছেন কঠোর অনুশীলন।

গতকাল মঙ্গলবার মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাসকিন জানান, ‘ইনজুরির কারণে দলের বাইরে থাকার স্বাদটা কখনোই আনন্দদায়ক নয়। ক্রিকেটার হিসেবে খারাপ লাগে। ২০১৯ বিশ্বকাপে যখন বাদ পড়েছিলাম, ঐ মুহূর্তটা খুব দুঃখজনক ছিল আমার জন্য। তবে এখন বুঝতে পারি, আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তাসকিনের সামনে বরাবরই বাধা হয়ে দাঁড়ায় ইনজুরি। তবে এতে তিনি দমে যাননি। উলটো নিজের শতভাগ  দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন ফিরে এসে প্রতিবার। তার ভাষায়, ‘এটাই নিজের আত্মবিশ্বাস কিংবা যেটাই হোক আমি শতভাগ দিচ্ছি। তবে গা বাঁচিয়ে খেলা আমার পক্ষে সম্ভব না, যেখানেই খেলি। বল হাতে নিয়ে খেলতে নামলে মাথায় থাকে না কীভাবে নিরাপদে খেলা যায়। আরো তো আমি ফাস্ট বোলার!

এসময় দেশের জন্য যে কোনো ফরম্যাটে খেলাই গর্ভের ব্যাপার উল্লেখ করে তাসকিন বলেন, ‘লাল-সবুজের হয়ে খেলাটা অনেক গর্বের ব্যাপার। শুধু এটা না, ক্রিকেটটাই আসলে। তো যখন খেলতে নামি, মাথায় এটা থাকে না যে, সামনে বড় ইভেন্ট আছে না কি আছে। আল্লাহ্ যাতে সুস্থ রাখেন, এটাই সবসময় দোয়া করি।

একপর্যায়ে তাসকিন নিজের ইনজুরি নিয়ে বলেন, ‘এখন ভালো অবস্থা। চারটা সেশন করলাম। ক্রমান্বয়ে বাড়ছে ওয়ার্কলোড। ফিটনেস সেশন, বোলিং সেশন ভালো যাচ্ছে। সামনে ওয়ার্কলোডের পরিমাণ আরো বাড়তে থাকবে। এভাবে যেতে থাকলেই সব ভালো থাকবে। আল্লাহ যদি চান, পাওয়ার কথা (আফগানিস্তান সিরিজ)। এখন দেখি কী হয়।

এদিকে আসন্ন বিশ্বকাপ নিয়ে টাইগার পেসার তাসকিন বলেন, ‘প্রত্যেকটা ম্যাচের আগে আসলে প্রস্তুতি নিতে হয়। নতুন দিন, নতুন ম্যাচ, নতুন প্রস্তুতি। আমরা তো উপমহাদেশেই খেলি। ভারতেরটা তুলনামূলক বেশি ভালো উইকেট হয়, ব্যাটিংয়ের জন্য। এক দিক দিয়ে ভালো, ওখানে ভালো করতে পারলে আত্মবিশ্বাস আরো জন্মাবে। আর হারানোর ভয়টা কম রেখে যদি এগোতে পারি, আমাদের জন্যই ভালো।

এক-দুই দিন খারাপ দিন যেতে পারে যে কোনো বোলার বা ক্রিকেটারের। সেটা যাবেই। তবে আমার বিশ্বাস, আমরা আমাদের সেরা ছন্দের সর্বোচ্চটা বাস্তবায়ন করতে পারলে ঐ কন্ডিশনেও ভালো করা সম্ভব। অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং, তবে আমরা ঐ চ্যালেঞ্জটা নেব ইনশাআল্লাহ্।

উৎস:দৈনিক ইত্তেফাক